আবার বিভিন্ন দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসকেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে চিঠি দিয়েছিল সংস্থাটি। কয়েদিদের ভোট দেওয়ার জন্য কারা মহাপরিদর্শককে চিঠি দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও বলেছিল কমিশন। কিন্তু এতে তেমন সাড়া পড়েনি। রাষ্ট্রপতি, তার সহধর্মিণী এবং কিছু সরকারি চাকরিজীবী ছাড়া কেউ এতে সাড়া দেননি। বিশেষ করে প্রবাসীদের কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। অথচ, প্রবাসী রয়েছে দেড় কোটির বেশি। আর ভোটের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তি (আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও অন্যান্য) রয়েছে ৫০ লাখের মতো।
নির্বাচনের পর ইসির তৎকালীন অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানিয়েছিলেন, ডাকযোগে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তবে ভোট দিয়েছেন এক হাজার ৯৬১ জন ভোটার, যারা বিভিন্ন এলাকায় ভোটের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। আবার অনেকের আবেদন যথাযথ প্রক্রিয়ায় না আসায় পোস্টাল ব্যালট পাঠানো হয়নি।
স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন প্রধান ও নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের জ্যেষ্ঠ সদস্য ড. তোফায়েল আহমেদ এ বিষয়ে বলেন, বর্তমান আইনে পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা আছে, কিন্তু প্রয়োগ হয় না। আমরা চাচ্ছি যারা বিদেশে আছেন কেবল তারা নন, যেন যারা দেশে আছেন, অক্ষম, নারী, কর্মস্থলের কারণে যারা এলাকার বাইরে আছেন, তাদের সকলের জন্য সুযোগটা রাখতে চাই। যারা রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন তাদের যেন সুযোগটা নিশ্চিত করা যায় সেটা ভাবা হচ্ছে। এতে একটা বিরাট অসুবিধা হচ্ছে, তাদের অনেকের আইডি কার্ড নেই। এক্ষেত্রে পাসপোর্টকে আমলে নেওয়া কথা ভাবছি।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার এ বিষয়ে বলেন, আমরা যাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি, তাদের সকলেই প্রায় প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থাটির কথা বলেছেন। আমাদের বড় ইস্যু হলো প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার অধিকার ও ভোটের অধিকার নিয়ে কী করা যায়, এই বিষয়গুলো আমরা খতিয়ে দেখব।
গত ২১ নভেম্বর সাবেক সচিব এএমএম নাসির উদ্দীনের নেতৃত্বে গঠিত নির্বাচন কমিশনও আইন সংস্কার নিয়ে ভাবছেন। ইতোমধ্যে তারা একটি কমিটিও গঠন করেছেন। তবে সেই কমিশন সরকারের সংস্কার উদ্যোগ ও সংস্কার কমিশনের কাছ থেকে আসা প্রস্তাবের ভিত্তিতে আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেবে। জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদকে আইন সংস্কার সংক্রান্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে।
সর্বশেষ হালনাগাদ অনুযায়ী, দেশে ভোটার রয়েছে ১২ কোটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার ১৬০ জন। আগামী বছর ২ মার্চ পরবর্তী হালনাগাদ তালিকা প্রকাশ করবে ইসি।